বিশেষ প্রতিনিধি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধির ওপর নজর রাখতো তারা। তারপর টার্গেট করতো গাড়ি। এরপর গাছ কেটে আটকে দিতো রাস্তা। পরে চালক ও যাত্রীদের লুট করে পালাতো।গাছ কাটার সুযোগ না পেলে চালকের চোখে শক্তিশালী টর্চের আলো ছুড়ে গাড়ি থামাতে বাধ্য করতো। আন্তঃজেলা ডাকাত দল ঠান্ডা শামীম বাহিনীর মূল হোতা শামীম ওরফে সব্দুল ও সেকেন্ড ইন কমান্ড আনিসুর ওরফে ঠান্ডাসহ চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
শনিবার (৪ জুন) ভোররাতের দিকে সাভার থানা এলাকার বলিয়ারপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঠান্ডা শামীম বাহিনীর প্রধানসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো—শামীম ওরফে সব্দুল (৩০), আনিসুর রহমান ওরফে ঠান্ডা (৪৫), সালাউদ্দিন (২৩), ইখতিয়ার উদ্দিন (৩১), সাইফুল ইসলাম (৩৫), জাহাঙ্গীর সরকার (৪০), সজিব ইসলাম (২৫), জীবন সরকার (৩৪), মিনহাজুল ইসলাম (২০), মাধব চন্দ্র সরকার (২৬)।এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল. একটি পাইপগান. দুটি এয়ার শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি শাবল, একটি চাপাতি, দুটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি করাত, একটি হাউজ কাটার, দুটি হ্যাকস ব্লেড, একটি দেশি কুড়াল, দুটি লেজার লাইট ও একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়শনিবার ৪ জুন রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মহিন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাহিনীর মূলহোতা ও সেকেন্ড ইন কমান্ডের নাম অনুসারে ডাকাত দলের নাম হয় ঠান্ডা শামীম বাহিনী। চক্রের অন্যতম দুই সদস্য একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। কারাগারে থাকার সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অপরাধীদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরে জামিনে বেরিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ডাকাত দল গড়ে তোলে। এ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা এখন ২৫ জন।সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আনিসুর ওরফে ঠান্ডা শামীম ও সালাউদ্দিন একত্রে বসে ডাকাতির মূল পরিকল্পনা করে। কোন জায়গায় কখন কীভাবে ডাকাতি করা হবে সেটার তথ্য সংগ্রহের জন্য কাকে নিয়োগ করা হবে কীভাবে ডাকাতি হবে, মালামাল কোথায় বিক্রি হবে— এসব বিষয় পরিকল্পনা করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ইফতিয়ার বিভিন্ন সময়ে ডাকাতির ধরন অনুযায়ী মিনি ট্রাক ও মাইক্রোবাস চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতো। রাজমিস্ত্রি সাইফুল ডাকাতির মালামাল বিক্রির দায়িত্ব পালন করতো। মিনহাজুল ও মাধবচন্দ্র কাজ করতো তথ্যদাতার।এরাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করে স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে ঠান্ডা শামীম বাহিনীকে যোগাযোগ করিয়ে দিতো। ইটভাটার শ্রমিক সজীব ও গার্মেন্টস শ্রমিক জীবন এবং পরিবহন শ্রমিক স্বপন চন্দ্র তাদের পেশার আড়ালে ডাকাতিতে অংশ নিতো।মূলহোতা শামীমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৭টি ডাকাতি মামলা ও আনিসুরে বিরুদ্ধে ডাকাতি, মাদক ও বিভিন্ন অপরাধের পাঁচটি মামলা রয়েছে।